Krishnaghana Jaam
₹400.00
কাহিনির শুরু অথবা বলা যায় ইতিহাসের একটি অধ্যায়েরও সূচনা প্রাচীন বাংলার এক গৌরবময় অঞ্চলকে নিয়ে। কালের প্রলেপে যে ইতিহাস হয়তো আজ বিবর্ণ, ঘটনা পরম্পরা অজ্ঞাত অথবা আভাসমাত্র। হরিনামে আকাশ-বাতাস মুখরিত করতে করতে প্রেমময় প্রভু শ্রীচৈতন্য ভক্তবৃন্দ সহিত হেঁটে গেছেন এই পথেই একসময়ে বাংলা থেকে গয়াধাম-বৃন্দাবন দর্শনে। এই পথের প্রতিটি ধূলিকণা তাই চৈতন্যময়। কাহিনির উল্লিখিত পথ বৃন্দাবন থেকে ছোটোনাগপুরের গভীর অরণ্য, আদিবাসী অধ্যুষিত বিস্তীর্ণ বনভূমি। ভূমিপুত্রদের মুখে এবং পদাবলীর ভাষায় ঝাড়িখণ্ডি। গন্তব্য পথ, অভীষ্ট লক্ষ্য গৌড়, সেখান থেকে নবদ্বীপ। তিনজন গৈরিক বস্ত্রধারী সন্ন্যাসী- শ্রীনিবাস গোস্বামী, নরোত্তম এবং শ্যামানন্দ। এই তিনজন বৈষ্ণব দশজন রক্ষী সহিত চলেছেন বৃন্দাবন থেকে নবদ্বীপের পথে। তাঁদের গুরু, বৃন্দাবনের ছয় গোস্বামীদের মধ্যে একজন, নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর কৃপাধন্য শ্রী জীব গোস্বামীর নির্দেশে। অরণ্যপথে এগিয়ে চলেছে এক শকট। শকটের ওপরে রাখা পণ্যের অনেকটা অংশ মোম মাখানো কাপড়ে ঢাকা, যাতে ভেতরে রক্ষিত সামগ্রী আকস্মিক বৃষ্টির জলে নষ্ট না হয়ে যায়। সেই কাপড়ের নিচে সেগুন কাঠের একটা বড়ো পেটিকা। পেটিকার ভেতর রয়েছে অমূল্য সম্পদ। “রত্ন, নীলমাধবের রত্ন কোষ!” বিপদ সংকুল ঝাড়িখণ্ডি অরণ্যভূমি পেরিয়ে তাঁরা এসে পৌঁছোলেন বাংলার সীমানায়। বাংলাদেশে তখন ঠগী, ডাকাতের চরম উপদ্রব। কোনো কোনো অঞ্চলের জায়গীরদার, ভূস্বামী কিংবা রাজ অধিপতি নিজেই স্বয়ং ডাকাত সর্দার। রক্ষা হল কি “রত্ন, নীলমাধবের রত্ন কোষ”?
In stock
Additional information
Weight | 0.75 kg |
---|---|
Dimensions | 8.5 × 5.5 × .75 in |
Author | |
Language | |
Binding | |
Page Count | |
Edition | |
ISBN | |
Publisher | Hawakal Publishers Private Limited |
Publish Date | |
Release Date | 26 November 2024 |
Alokparna –
যা কিছু গোপন তা যেমন উন্মুক্ত হওয়ার জন্যই গুপ্ত, তেমনই পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মত একের পর এক ঘটনা আমাদের সামনে আসতে থাকে। পরতে পরতে ঘটনাক্রম আমাদের হাত ধরে গভীরে নিয়ে যায়। এবং এক সময় আমরা আবিষ্কার করি, ছোটনাগপুরের পথ ছেড়ে আমরা কখন যেন এসে পড়েছি বিষ্ণুপুরে, মহারাজ হাম্বিরের সামনে। এবং তার সাথে সাথে আমাদের হাত ধরে বৈষ্ণব ভাবধারা, মেঘের আড়াল থেকে চলমান সুর্যের মতই অপ্রত্যাশিত ভাবে।
কৃষ্ণঘন যাম, গোটা কালোরাত জুড়ে জয়দীপ আমাদের গল্প শোনাননি। তিনি ইতিহাসকে জ্যান্ত করে গিয়েছেন। জয়দীপকে যেহেতু ব্যক্তিগতভাবে চিনি সেহেতু বলতে পারি, শুধুমাত্র লেখনীতেই নয়, মৌখিক বর্ণনাতেও জয়দীপ ইতিহাসকে চোখের সামনে জীবন্ত করে দিতে পারেন। এবং সেই পারদর্শিতা পুরো বইতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। পাঠককে শুধু দিল থামকে বসতে হবে, এক থ্রি ডি শো শুরু হওয়ার অপেক্ষায়। এবং সবশেষে রাতারাতি বাজিমাত করে বেরিয়ে যাবেন জয়দীপ।
এই গোটা বইটাকে যদি এক কথায় প্রকাশ করতে বলা হয়, তাহলে বলা উচিৎ, এটি unputdownable,- এর বাংলা কি হওয়া উচিৎ তা নিয়ে আমি বেশ সময় অতিবাহিত করে দেখেছি, সুবিধা হয়নি। আমার মতে লেখক তখনই সফল হন, যখন তিনি পাঠককে একটানে বইয়ের মধ্যে এনে দাঁড় করিয়ে দেন। আমাদের চোখের সামনে দল- মর্দন থেকে গোলা ছুটে যায় বিষ্ণুপুরের আকাশ চিরে, ভাগিরথীর তীরে এসে থামে নবাবের বজরা, যুবরাজ কৃষ্ণ সিংহর সাথে সাথে পাঠকও যেন বর্গী সেনাদের তাবুতে নজর রেখে চলেন সারাটা রাত জুড়ে। এবং রোমহর্ষক সমস্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে দিনেন্দ্রর সাথে আমরা এসে পৌঁছোই মুর্শিদাবাদে। এক ঐতিহাসিক পর্যটন এসে থামে এই খানে। তবে পুরোপুরি থেমে যায় কি? আমরা যেমন জানতাম ছোটনাগপুরের রাস্তায় সেই যাত্রার শুরুয়াৎ অন্য কোথাও হয়েছিল, তেমনই আমি আশা রাখি এই গাঢ় কালো রাতের শেষ অন্য কোথাও হবে। আবার হয়তো নিজের হৃৎপিন্ডটাকে হাতে নিয়ে এসে বসবো জয়দীপের ইতিহাস ক্লাসে।